যেভাবে নকল দুধ তৈরি হচ্ছে সয়াবিন তেল ও মিল্ক পাউডার মিশিয়ে

সয়াবিন তেল – বড় ভাই সনজিত ঘোষের সহযোগিতায় পাবনা থেকে নকল দুধ তৈরি করা শিখেছি। বগুড়ার সোনাতলার বিভিন্ন গ্রামের গৃহস্থের বাড়ি থেকে দুধ দোহন করে আনি। এর মধ্যে সয়াবিন তেল, পার-অক্সাইড, মিল্ক পাউডার ও গ্লুকোজ মেশানো হয়। খাঁটি দুধের ফ্লেবার আনতে ব্লেন্ডার মেশিন ব্যবহার করা হয়।’

রবিবার দুপুরে বগুড়া ডিবি পুলিশের কার্যালয়ে এসব তথ্য দেন গ্রেফতার হওয়া নকল দুধ ব্যবসায়ী সরজিত ঘোষ।

তিনি জানান, প্রতিদিন উৎপাদিত দুধের মধ্যে ৩০০ লিটার ব্র্যাকের দুধ ক্রয় কেন্দ্রে পাঠানো হয়। বিভিন্ন এলাকার হোটেলে এ দুধ সরবরাহ করা হয় মিষ্টি ও চা তৈরির জন্য। বাসাবাড়িতে খাবার জন্যেও এ দুধ সরবরাহ করা হয়ে থাকে।

শীতের পিঠা ও অন্যান্য কাজে দুধের ব্যবহার বেশি হয় বলে চাহিদাও বেশি থাকে বলে জানান সরজিত ঘোষ।

শনিবার রাতে বগুড়া ডিবি পুলিশ সোনাতলা উপজেলার শিহিপুর মধ্যপাড়া গ্রামের একটি বাড়িতে নকল দুধের কারখানা সন্ধান পায়। সেখান থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। নকল দুধ তৈরির বিভিন্ন কাঁচামাল এবং রাসায়নিক দ্রব্য উদ্ধার করা হয়।

এ ব্যাপারে ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মাহবুব সোনাতলা থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেন।

রবিবার দুপুরে গ্রেফতারকৃত তিনজনকে আদালতে হাজির করে সাতদিন করে রিমান্ডের আবেদন জানান।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার পাকুল্যা ঘোষপাড়ার অশ্বিনী ঘোষের ছেলে সজিব কুমার ঘোষ (২২), পাবনার বেড়া উপজেলার নাকাইল্লা গ্রামের অজিত ঘোষের ছেলে সরজিত ঘোষ (২০) ও একই উপজেলার তাটুরিয়া পশ্চিমপাড়া মনতাজ মল্লিকের ছেলে আবদুল হান্নান (২০)।

বগুড়ার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান রবিবার দুপুরে তার কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিয়ে জানান, গ্রেফতার আসামিরা সোনাতলার শিহিপুর মধ্যপাড়া গ্রামে জনৈক আবদুল মান্নানের বাড়িতে গত দেড় বছর ধরে নকল দুধ তৈরি করে বাজারজাত করে আসছিলেন। বাজার থেকে অল্প পরিমাণ দুধ কিনে এর সঙ্গে পানি, মিল্ক পাউডার, সয়াবিন তেল, পার-অক্সাইড, হুয়ে পারমিয়েট পাউডার ও গ্লুকোজ পাউডার মিশিয়ে নকল দুধ তৈরি করেন তারা।

তিনি জানান, গোপনে খবর পেয়ে ডিবি পুলিশের একটি চৌকস দল শনিবার গভীর রাতে সোনাতলার শিহিপুরের ওই বাড়িতে অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে কারখানার মালিক সনজিত ঘোষ ও বাড়ির মালিক আবদুল মান্নান পালিয়ে যান।

পুলিশ সুপার জানান, কারখানা থেকে নকল দুধ তৈরির ২৫ কেজি হুয়ে পারমিয়েট পাউডার, ৫০ কেজি মাই মিল্ক পাউডার, ১০ কেজি পার-অক্সাইড, ১০ কেজি গ্লুকোচ পাউডার, ২০ লিটার সয়াবিন তেল, ৫০টি ব্লেন্ডার মেশিন, ভেজাল দুধ ১০০ লিটার, কয়েকটি কন্টেইনার ও অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।

চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, রাসায়নিক দ্রব্যের মাধ্যমে তৈরি এসব দুধ মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। ক্যান্সারের মত মরণব্যাধিও হতে পারে। শিশুদের মেধা বিকাশ, তাদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশের অন্তরায় এ নকল দুধ